আপনার কি যৌন চাহিদা বেশি? জেনে নিন কারণ ও সমাধান!
অনেক সময়ই কিছু মানুষের মধ্যে অতিরিক্ত যৌন আকাঙ্ক্ষা বা চাহিদা দেখা যায়, যা তাদের দৈনন্দিন জীবন, সম্পর্ক, মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। এই অবস্থাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানে “Hypersexuality” বলা হয়। এটি নিছক যৌন ইচ্ছা নয়, বরং এটি নিয়ন্ত্রণহীন এক প্রবণতা, যা ধীরে ধীরে একটি মানসিক সমস্যায় রূপ নিতে পারে। নারীদের ক্ষেত্রে এই সমস্যাকে বলা হয় নিমফোম্যানিয়া (Nymphomania) এবং পুরুষদের ক্ষেত্রে বলা হয় স্যাটেরিয়াসিস (Satyriasis)।
আপনার কি যৌন চাহিদা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি? জেনে নিন কারণ ও সমাধান
কিভাবে বুঝবেন আপনার যৌন চাহিদা অস্বাভাবিক মাত্রায় বেশি?
নিম্নোক্ত লক্ষণগুলোর কয়েকটি বা সবগুলো আপনার মধ্যে থাকলে বুঝবেন আপনি এ সমস্যায় ভুগতে পারেন:
১. নিয়ন্ত্রণহীন হস্তমৈথুন – দিনে একাধিকবার হস্তমৈথুন করা এবং তা বন্ধ করতে না পারা।
২. অশ্লীল কনটেন্টে অতিরিক্ত আসক্তি – নিয়মিত পর্নগ্রাফি দেখা, বিকৃত যৌন কল্পনায় ডুবে থাকা।
৩. অপ্রয়োজনীয় যৌন সম্পর্ক স্থাপন – নতুন বা অচেনা মানুষের সঙ্গে বারবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করা।
৪. সাইবার সেক্স আসক্তি – ভিডিও কল বা চ্যাটে যৌন উত্তেজনায় লিপ্ত হওয়া।
৫. শরীর প্রদর্শনের ইচ্ছা – নিজের শরীর উন্মুক্ত করে অন্যকে উত্তেজিত করার বাসনা।
৬. চিন্তায় যৌনতা প্রাধান্য পাওয়া – যেকোনো কথায় বা পরিস্থিতিতে যৌন চিন্তা চলে আসা।
৭. একাধিক সঙ্গী/সম্পর্ক – শুধুমাত্র যৌন চাহিদা পূরণের জন্য একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করা।
অতিরিক্ত যৌন চাহিদার কি কারনে হতে পারে?
হরমোনজনিত ভারসাম্যহীনতা।
বিপরীত লিঙ্গের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির সমস্যা।
চাইল্ডহুড ট্রমা বা যৌন নির্যাতনের অভিজ্ঞতা।
ডিপ্রেশন বা উদ্বেগ।
পর্ন আসক্তি ও সোশ্যাল মিডিয়ার নেতিবাচক প্রভাব।
মানসিক রোগ যেমন Bipolar Disorder বা OCD।
যৌন চাহিদা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি? সমাধান কী?
এই সমস্যার চিকিৎসা আছে। সঠিক সময়ে চিকিৎসকের কাছে গেলে এবং কিছু স্বাস্থ্যকর অভ্যাস অনুসরণ করলে এটি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
১.মানসিক স্বাস্থ্য বিশ্লেষণ করান
বিশেষজ্ঞ মনোচিকিৎসক বা সাইকোথেরাপিস্টের শরণাপন্ন হন। তারা আপনার ইতিহাস দেখে বুঝতে পারবেন সমস্যার গভীরতা।
২. ঔষধ গ্রহণ
প্রয়োজনে চিকিৎসক কিছু স্নায়ুবিষয়ক ঔষধ প্রেসক্রাইব করেন, যা মস্তিষ্কের উত্তেজনা ও আবেগ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
৩. মেডিটেশন এবং ধ্যান
প্রতিদিন অন্তত ১৫-৩০ মিনিট মেডিটেশন করার চেষ্টা করুন। এটি মনকে শান্ত রাখে ও যৌন চিন্তা থেকে দূরে রাখে।
৪. ধর্মীয় অনুশীলন
আপনি মুসলিম হলে নামাজ পড়তে পারেন, যা নিয়মিতভাবে মানসিক প্রশান্তি দেয়। অন্য ধর্মাবলম্বীরাও প্রার্থনার মাধ্যমে আত্মসংযমের অভ্যাস করতে পারেন।
৫.রোজা বা উপবাস
প্রতিমাসে ৪-৫ দিন রোজা বা উপবাস রাখার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এতে শরীর ও মন নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং সেক্স ড্রাইভ কমে যায়।
৬.সঠিক খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুন
বেশি চর্বিযুক্ত, ঝাল বা উত্তেজক খাবার পরিহার করুন। শাকসবজি, ফলমূল এবং প্রোটিনভিত্তিক খাবার গ্রহণ করুন। বেশি পানি পান করুন – হাইড্রেশন শরীরকে ঠান্ডা রাখে।
৭. যৌন উদ্দীপক জিনিস থেকে দূরে থাকুন
পর্ন, উন্মুক্ত পোশাকের ছবি, বা যৌন উত্তেজক বই/ভিডিও থেকে নিজেকে বিরত রাখুন। সোশ্যাল মিডিয়ায় স্ক্রল করা কমান – বিশেষ করে রাতের বেলা।
যৌন চাহিদা একটি স্বাভাবিক প্রবৃত্তি, কিন্তু যখন এটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তখন সেটি ব্যক্তি ও সমাজের জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। ভালো খবর হলো, এটি একটি নিয়ন্ত্রণযোগ্য সমস্যা। প্রয়োজন শুধু সচেতনতা, আত্মসংযম এবং সঠিক দিকনির্দেশনার।
আপনার যদি মনে হয় আপনি বা আপনার পরিচিত কেউ এই সমস্যায় ভুগছেন, তাহলে দেরি না করে একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। মনে রাখবেন, সমস্যাকে অস্বীকার নয় বরং মোকাবিলা করাই হচ্ছে বুদ্ধিমানের কাজ।
আরো পড়ুন:- দীর্ঘক্ষণ সহবাস করার উপায় কি
আরো পড়ুন:- দ্রুত বীর্যপাত থেকে মুক্তির ১০ টি কার্যকরী উপায়
আরো পড়ুন:- খেজুর কিভাবে খেলে যৌন শক্তি বাড়ে ?
আরো পড়ুন:- দ্রুত বীর্যপাত কেন হয় – আপনি কি যানেন?
আরো পড়ুন:- প্রাকৃতিক নিয়মে লিঙ্গ বড় করার উপায় জেনে নি!
আরো পড়ুন:- পিকিং মেথড কি – পিকিং মেথডের সঠিক পদ্ধতি
আরো পড়ুন:- যেই ১০ টি কারণে আপনার যৌন শক্তি কমে যাচ্ছে
আরো পড়ুন:- পানির মতো পাতলা বীর্য! ঘন করবেন কিভাবে?
আরো পড়ুন:-বাসর রাত কিভাবে শুরু করবেন? – বাসর রাতের কিছু কথা আপনি কি জানেন!
Dr S R Khan – Skin and Sex Physician MBBS (ShSMC)
এমবিবিএস (শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ) ঢাকা।
সাবেক মেডিকেল অফিসার ইবনে সিনা হসপিটাল ধানমন্ডি
সাবেক পিআরপি আইসিডিডিআরবির, মহাখালী, ঢাকা
বিএমডিসি রেজি ৯২১৯৩
চেম্বার :TestoLife Hospital
আরশিনগর বসিলা, মোহাম্মদপুর ঢাকা।